তোফায়েল হোসেন জাকির:
নদীবেষ্টিত জেলা গাইবান্ধাসহ উত্তরের কুড়িগ্রাম, রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার ২০ টি উপজেলার ১০৯ টি ইউনিয়নের ছোট-বড় ৩ শতাধিক চর-গ্রাম । এসব অঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীর বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য বেলে-বালুচর। বন্যা পরবর্তী চরাঞ্চলের কৃষকরা বাদাম ফসলে দিনবদলের স্বপ্ন দেখেন। তাই চরাঞ্চলের কৃষকদের বাদাম যেনো গুপ্তধন। ইতোমধ্যে স্বপ্নের এই ফসল ঘরে উঠাতে শুরু করেছে কৃষকরা।
সম্প্রতি গাইবান্ধার কাবিলপুর, রতনপুর, এরেন্ডাবাড়ী ও কুচখালী চরসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে দেখা গেছে কৃষকদের বাদামের আবাদ। ধুধু বালুচরের চারিদিকে নজর কাড়ছে সবুজের সমাহার। ইতোমধ্যে স্বপ্নের এই ফসল ঘরে উঠাতেও শুরু করেছে কৃষকরা। কুুড়িগ্রামের চিলমারি, রৌমারী. রাজিবপুর, উলিপুর উপজেলার চরাঞ্চলে একই চিত্র।
সরেজমিনে জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার বুক চিরে বয়ে গেছে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়াসহ বিভিন্ন নদ-নদী। এসব নদের মাঝে ভেসে উঠেছে দেড় শতাধিক বালুচর। এগুলো চরে বসবাস করছে কয়েক লাখ মানুষ। এসব মানুষ নানা ফসলের উপর নির্ভশীল। তারা যুগযুগ ধরে চাষ করে আসছেন ভূট্রা-মরিচ, বাদামসহ বিভিন্ন ধরণের ফসল। বিশেষ করে বাদাম ফসলই দিনবদলের স্বপ্ন দেখেন তারা। তাই অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এ বছরেও চাষ করেছে সহ¯্রাধিক হেক্টর বাদাম। এরই মধ্যে ঘরে নিতে শুরু করছে স্বপ্নে এই বাদাম ফসল। ফলনও হয়েছে বাম্পার। ফলে কৃষকের মুখে দেখা দিয়েছে হাসির ঝিলিক। দিনব্যাপী বাদাম তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক-কৃষাণীরা। যেন দম ফেলানোর ফুসরত নেই তাদের।
কুচখালী চরের কৃষক মোমিন মিয়া বলেন, এবছরে ৩ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। এ আবাদে তেমন কোন খরচ হয় না। শুধু বীজ ও শ্রমিকের ব্যয় । তাই স্বল্প খরচে অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব এই বাদাম ফসল থেকে।
আরেক কৃষক এন্তাজ আলী বলেন, এক বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে বাদাম চাষাবাদে খরচ হয় প্রায় ৪ হাজার টাকা। এতে প্রায় ৮ থেকে ১০ মণ বাদাম উৎপাদন হয়ে থাকে। বাজার দাম ভালো থাকলে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব।
গাইবান্ধা কৃষি অফিসার মাসুদুর রহমান বলেন, অত্যন্ত লাভজনক ফসল বাদাম। তাই এ ফসলে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করাসহ অধিক ফসল উৎপাদনে সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।