ডেস্ক রিপোর্ট: রশিদা (৪০) বাড়ী গাইবান্ধার জেলার ঘাগোয়া ইউনিয়নের পন্ডিতপাড়া গ্রামে। রশিদার স্বামী একজন দিনমজুর, অনেক অভাব অনটনের মধ্যেই দিন কাটছিল তাদের জীবনযাত্রা। তাদের পরিবারের ৩ সন্তান, ১ মেয়ে ও ২ ছেলে। তিন ছেলে মেয়ের লেখা পড়া চালানোর সামর্থ না থাকা সত্তেও খুব কষ্ট করে ছেলেটিকে ১০ শ্রেণিতে পড়ার পর আর পড়তে পারে নাই, আর অন্য ছেলেটি ৪র্থ শ্রেণি, মেয়ে ১ম শ্রেশি পড়ছেন।
২০১৯ সালে গণ উন্নয়ন কেন্দ্র (জিইউকে) বাস্তবায়নাধীন দাতা সংস্থা স্ট্রমী ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে সোসিও ইকোনোমিক ইম্পাওয়ামেন্ট উইথ ডিগনিটি এন্ড সাসটেনিবিলিটি-সিডস্ প্রকল্পে সদস্যভুক্ত হন। সংস্থার কর্মীদের সহায়তায় তৈরি করেন পারিবারিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (এফডিপি)। কিভাবে জীবনযাত্রার উন্নয়ন করা যায় তা এই পরিকল্পার মাধ্যমে জানতে পারেন। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে উন্নয়নমুলক কাজে উদ্বুদ্ধ হন। পরবর্তীতে এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে তার ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেন। কারন তার স্বামীর একার পরিশ্রমের টাকায় পরিবারের উন্নতি করা সম্ভাব নয়। তার ১ম বছরের পরিকল্পনা মাফিক বড় ছেলেকে প্রকল্পের আওতায় ৩ মাস মেয়াদে মোবাইল সার্ভিসিং (ওন্তাদ মডেল) এ স্থানীয়ভাবে কাজ শিখতে সাহায্য করেন ও দোকান দিয়ে নিজের পায়ে দাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা করেন। তার বাড়ির পাশে একব্যক্তির দেড় বিঘা জমিতে ১০ মন ধান দেয়ার শর্তে লীজ নেন। স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম ও সিএসপি আমেনা বেগমের সহযোগিতায় দোকান থেকে ভাল বীজ ক্রয় করেন। ওই জমিতে বিভিন্ন শাক-শব্জী চাষ করেন। পাশাপাশি মুরগী পালন করেন ও ব্যক্তিগত সঞ্চয় জমা করতে থাকেন। লীজের জমিতে বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ করে স্থানীয় বাজার ও পাইকারদের কাছে তা বিক্রি করেন। ২০ হাজার সবজি চাষে ব্যয় করে ৫০ হাজার টাকা উপার্জন করেন। এতে তিনি ৫০দিনে ৩০ হাজার টাকা আয় করেন।
এরপর ”পন্ডিতপাড়া চিল আত্বনির্ভরশীল দল” নামের এসআরজি এর সদস্যভুক্ত হন ও নিয়মিত সভা করেন। তার অভিজ্ঞতা তিনি অন্যদের সাথে আলোচনা করেন। এতে এফডিপি সকল সদস্য উদ্বুদ্ধ হন এবং তারা সম্মিলিতভাবে জমি লীজ নিয়ে শবজী চাষের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন ।
পরিকল্পনা অনুযায়ী অল্পদিনে রশিদা বেগম আয় উপার্জন করায় তার আত্মবিশ্বাস ও প্রেরণ বেড়েছে। এভাবেই তিনি এগিয়ে যেতে চান সামনের দিকে।