এম.এ জলিল, রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরের আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিককে স্ত্রী ও প্রেমিক মিলে হত্যা করে লাশ আলমারীতে করে অন্যত্র নিয়ে মাটিতে পুতে রাখা হয়। আর এই পরিকল্পনা করা হয় দু’মাস আগে থেকেই। এতথ্য জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। বুধবার দুপুরে র্যাব ১৩-এর কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বেনজীর আহমেদ বলেন, রথীশ চন্দ্রকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় দুই মাস আগে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী নিখোঁজের একদিন আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ভাত ও দুধের সঙ্গে ১০টি ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ানো হয় তাকে। এরপর অচেতন হয়ে পড়লে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় তাকে।
র্যাবের মহাপরিচালক জানান, নিহত ব্যক্তির স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হয়ে প্রেমিক কামরুল ইসলামের সহায়তায় তার স্বামীকে খুন করেন।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্নিগ্ধা সরকার জানিয়েছেন, পরকীয়া থেকে পারিবারিক কলহ, সন্দেহ ও অশান্তি থেকেই স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। হত্যাকাণ্ডে সহায়তা করেন একই স্কুলের শিক্ষক ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম।
‘হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে রথীশ চন্দ্রের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান কামরুল। সকাল ৯টার দিকে তিনি একটি ভ্যান নিয়ে আসেন। মরদেহ গুমের উদ্দেশে নিহতের স্ত্রী দীপা আলমারি পরিবর্তনের কথা বলে কামরুলের সহায়তায় তার লাশ আলমারিতে ভরেন। পরে তিন ব্যক্তির সহায়তায় ওই মরদেহ ভ্যানে তুলে তাজহাট মোল্লাপাড়ার নির্মাণাধীন ওই বাড়িতে পুঁতে রাখা হয়। ভ্যানে তোলার কাজে সহায়তাকারী তিন ব্যক্তিকে কামরুল মাস্টার তার সঙ্গে নিয়ে আসেন।’
বেনজীর আহমেদ আরও জানান, তাজহাট উচ্চবিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী মোল্লাপাড়ার রবিউল ইসলামের ছেলে সবুজ ইসলাম (১৭) ও রফিকুল ইসলামের ছেলে রোকনুজ্জামান (১৭) গর্তের মাটি ভরাটে সহায়তা করেন।
ওই দুই শিক্ষার্থীর স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র্যাবের মহাপরিচালক জানান, ২৬ মার্চ শিক্ষক কামরুল ইসলামের নির্দেশে ৩০০ টাকার বিনিময়ে তারা গর্ত খুঁড়ে রাখেন। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বালু দিয়ে গর্ত ঢেকে রাখেন। কামরুল তাদের শিক্ষক হওয়ায় তার আদেশ পালন করেছেন তারা।
এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান এবং স্নিগ্ধা ও দুই শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করার কথাও জানান র্যাব মহাপরিচালক।